উত্তর: খাদ্যপুষ্টির বিষয়ে আমাদের কিছু সাধারণ নির্দেশনা রয়েছে যা আশা করি ইতিমধ্যেই আমাদের থেকে জেনেছেন, যদি না জানা থাকে তাহলে অবশ্যই জেনে নিন। আজকের যুগে এমন হয়েছে যখন পাশ্চাত্যের লোকজন বলবে এটা ভালো তো সেটার পিছনে আমরা হুজুগে হয়ে যাই। চিয়া সিড (Chia Seeds) – একটি উচ্চ প্রোটিন,ফ্যাটি এসিড, ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম,ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার যাতে পর্যাপ্ত ফাইবার রয়েছে। বর্তমানে এটাকে সুপার ফুড হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। চিয়া সিডে-
- পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।
- মুরগির ডিম থেকে প্রায় ৩ গুণ বেশি উচ্চমাত্রার প্রোটিন আছে।
- পালংশাকের চেয়ে প্রায় ৩গুণ আয়রন(লোহা)।
- কলার চেয়ে প্রায় ২গুণ পটাশিয়াম।
- স্যালমন মাছের চেয়ে প্রায় ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা হৃদরোগের ঝুঁকি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।
- দুধের চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম ,যা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং মজবুত করে তুলতে বিশেষ উপকারী।
- উচ্চ প্রোটিন থাকার কারণে কিডনি ও আমাশয় রোগীদের জন্য একটা সমস্যার সৃষ্টি করে।
- অনেকের ত্বকে ফুসকুড়ি, অ্যালার্জি, চুলকানি এমনকি অ্যানাফিল্যাক্সিসের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
- রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে ফলে ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি কমে।
ফাইবার-অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিছু ক্ষেত্রে কোলন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে। কিন্তু ক্যান্সার অলরেডি হয়ে গেলে চিয়া সিড খেলে ভাল হবেন এমন নয় বরং বিপরীত ক্ষতিকরও হতে পারে।
সাবধানবাণীঃ
- অনেক বেশি ফাইবার থাকার কারণে যাদের পায়খানা আমাশয় সাথেও পাতলা পায়খানার সমস্যা তাদের জন্য আরও ভয়ংকর হতে পারে।
- এছাড়া রয়েছে কমলার চাইতে প্রায় তিন গুণ বেশি ভিটামিন সি আমাদের শরীরে শাকসবজি ফলমূল ভাত পানিতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। সুতরাং ভিটামিন সি এর পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে অতিরিক্ত ভিটামিন সি’র কারণে ডায়রিয়া, বমিভাব ও বমি, মাথাব্যথা, বৃক্কে পাথর, অনিদ্রা, বুক জ্বালাপোড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে এর অতিরিক্ত মাত্রা খাওয়ার রুচি কমিয়ে দিতে পারে।
- অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
- পর্যাপ্ত পানি পান না করে চিয়া সিড বেশি খেলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিয়ে dehydration হতে পারে।
- দেহের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ কমায় তাই অতিরিক্ত চিয়া সিড সেবনে রক্তচাপ বেশি কমেগিয়ে মারাত্মক অবস্থা হতে পারে।
- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড রক্ত পাতলা করে দেয় যা রক্তপাতের আশঙ্কা বাড়ায়।
- কয়েকজন বিজ্ঞানীর দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষায় দেখা গেছে যে চিয়া সিড প্রোটেস্ট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
খাওয়ার নিয়মঃ
- ব্লেন্ডার এর সাহায্যেটক-দই, চিয়া সিড, ও শসা দিয়ে একসাথে মিক্সড করে স্মুথি বানিয়ে খাওয়া যায়।
- কলা, খেজুর,বাদাম ও চিয়াসিড একত্রে স্মুথি বানিয়ে খেতে পারেন।
- যেকোন সালাদ বা কাটা ফলমূলের উপরে চিয়া সিড ছিটিয়ে খাওয়া যায়। এটিই সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয়।
- যেকোন ফলের জুসের সাথে চিয়াসিড মিশিয়ে ।
১ গ্লাস পানিতে অর্ধ চা-চামচ চিয়া সিড ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ভিজিয়ে।
নিরাপদ মাত্রাঃ
সাধারণভাবে এক চা চামচের বেশি কারোর জন্য খাওয়া উচিত নয়। অর্ধ চা-চামচ বা তারো কম প্রতিদিন বা একদিন পরপর খাওয়া যায়।
আপনার শরীরে যদি অর্ধ চা চামচেরও সিয়া সিড খেলে সমস্যা অনুভব হয় তাহলে অবশ্যই আপনার প্যাথলজিকাল চেষ্টা না ধরা পড়লেও। ফাংশনাল কোন সমস্যা শুরু হয়েছে। তখন Genetic Homeopathy চিকিৎসা করে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
বিভিন্ন ব্যবসায়ী এবং ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটর আকর্ষণীয়ভাবে আপনাদের সামনে ভিডিও লেখনি প্রকাশ করবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ তাদের উদ্দেশ্যই থাকে ব্যবসা এবং জনপ্রিয়তা।
সুন্দর পৃথিবীর খোঁজে
সুন্দর পৃথিবীর জন্য