চিকিৎসাক্ষেত্রে কিছু একটা করব যাতে মানুষ ক্ষতিহীনভাবে শুধু উপকারী চিকিৎসা পায়। যাতে রোগী দ্রুতগতিতে,স্বল্প সময়ে,নিরাপদে ও স্থায়ীভাবে রোগ কষ্ট থেকে মুক্তি পায় এবং একই সাথে ইমিউনিটি শক্তিশালী হয়। যাতে ভবিষ্যতে দুরারোগ্য রোগ তাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যৎ তৈরি না করে। মানুষটি সারা জীবন কত কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করে অথচ জীবনের একটা পর্যায়ে কী অদ্ভুত দুরারোগ্য রোগ দেখা দেয়! সে নিঃস্ব হয়ে যায়! কী কষ্ট! কী যন্ত্রনা! আর হতাশা! কারণ এতদিন ইমিউনিটির বিপরীতে বিভিন্ন চিকিৎসাতে কিছুটা উপশম পেলেও এখন অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে!
সুগভীর মননশীলতা এবং আরোহ-অবরোহ সঞ্জাত সত্য বলে প্রমাণিত বা প্রমাণ করা যায় এমন জ্ঞানকেই বিজ্ঞান বলে। গভীর উপলব্ধি হতেই বৈজ্ঞানিক চিন্তার উন্মেষ হয়, সেজন্য রকমারী কল্পনার আশ্রয় গ্রহণ করার প্রয়োজন হয় না। পৃথিবী গোলাকার এটা সুষ্পষ্টরূপে বুঝতে পেরেই পিথাগোরাস (Pythagoras) দিকচক্রবালের দিকে জাহাজে চড়ে জলযাত্রা করেছিলেন। তিনি কি ভুল করেছিলেন? কলম্বাসের (Columbus) পৃথিবী পর্যটন আরম্ভ ও ম্যাগিলান (Magellan) সমাপ্ত করার পূর্ব পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার বৎসর ধরে এরিষ্টটল (Aristotle) ছাড়া সবই ধারণা করতেন পৃথিবী চেপ্টা – সেজন্য পিথাগোরাসের উপলব্ধি কি অপরিপক্ক বা অসত্য ছিল?
দুইটি উদ্দেশ্যের যেকোনটির জন্য গবেষণা করা যায় – induction বা সাধারণ সিদ্ধান্তের জন্য পর্যবেক্ষণ, অথবা সাধারণ সিদ্ধান্তের সত্যাসত্য নিরীক্ষণ। বিশ্লেষণ, deduction বা অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বিশ্লেষণাত্মক অবরোহ পদ্ধতির নামই গবেষণা। বৈসাদৃশ্যের দ্বারা তুলনা করা, মূল্যায়ন করা এবং বিচারপূর্বক সমাধান করার নামই পর্যবেক্ষণ।
ভাব প্রকাশ করার জন্যই আমরা চিন্তার আশ্রয় গ্রহণ করি। বিচার-বিশ্লেষণের জন্য আমরা আমাদের গবেষণালব্ধ তথ্যসমূহ সুনির্দিষ্ট প্রণালীতে বাক্যে প্রকাশ করি। গবেষণা, বিশ্লেষণাত্মক অবরোহ, বিজ্ঞানসম্মত বক্তব্যসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ এবং বৈজ্ঞানিক আরোহ-পদ্ধতির দ্বারাই আমরা সত্যাসত্য প্রমাণ করি।
সকল জীবদেহের গঠন, বিপাকীয় ক্রিয়াকলাপ ও বংশগতিমূলক তথ্য বহনকারী একক হলো কোষ। শরীর বিজ্ঞানের ভাষায় “কোষ হলো জীবদেহের গঠন ও কাজের একক যা স্বনির্ভর এবং আত্ম প্রজননশীল বৈষম্যভেদ্য পর্দা দিয়ে পরিবেষ্টিত অবস্থায় নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রোটোপ্লাজম নিয়ে গঠিত এবং পূর্বতন কোষ হতে সৃষ্ট।”
মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ জীবই বহুকোষী; তবে ব্যাক্টেরিয়া এবং এ ধরনের কিছু জীব এককোষী। মানবদেহে প্রায় ৩৭ লক্ষ কোটি কোষ রয়েছে। একটি কোষের আদর্শ আকার হচ্ছে ১০ মাইক্রোমিটার এবং ভর হচ্ছে 1 ন্যানোগ্রাম।
জীবের মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রিয়াই কোষের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয়। সকল কোষের মধ্যে কার্যক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বংশগতীয় তথ্য এবং পরবর্তী বংশধরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে কোষের DNA তে। সকল কোষেই কিছু সাধারণ উপাদান বা অংশ থাকে, যেমন – কোষকেন্দ্র (নিউক্লিয়াস), কোষপঙ্ক (সাইটোপ্লাজম) এবং কোষঝিল্লি বা কোষপ্রাচীর।
কোষের সবচেয়ে বড় অঙ্গাণুটিকে কোষকেন্দ্র (Neucleus) বলে। উপরে আমরা অতিসংক্ষেপে কোষ সম্পর্কে জানলাম । এবার আমরা ডিএনএর মধ্যে জিন সম্পর্কে জেনে নেই —
[ক] জিনকে বংশগতির ধারক ও বাহক বলা যায়, কারণ: ক্রোমোজোমের প্রধান উপাদান DNA -ই জিনের রাসায়নিক রূপ। DNA অণুই জীবের বংশগতির বৈশিষ্ট্যাবলী পুরুষানুক্রমে এক জনু থেকে অপর জনুতে বহন করে। এই কারণে DNA অণুকেই জিন বলে মনে করা হয়। যে সব জীবদেহে DNA থাকে না, কেবল RNA থাকে, সেক্ষেত্রে RNA জিন হিসেবে কাজ করে (যেমন উদ্ভিদ ভাইরাসের ক্ষেত্রে)।
[খ] জীবের এক-একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য একাধিক জিন কাজ করে, অর্থাৎ এক-একটি বৈশিষ্ট্য একাধিক জিনের সম্মিলিত ক্রিয়ার ফল। যেমন : মানুষের চামড়ার রং -এর ক্ষেত্রেও আছে বেশ কয়েক জোড়া জিন। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে একটি মাত্র জিন বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রিত করে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যালবিনো (albino) মানুষের দেহের চর্ম, চুলের রং ইত্যাদি একটি মাত্র জিনের মিউটেশনের ফলে সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে একটি মাত্র জিন দেহের বিভিন্ন অংশের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে।
[গ] আকৃতি ও সংযুক্তি অপরিবর্তিত রেখে জিনের স্ব-প্রতিরূপ [self duplication] গঠনের ক্ষমতা আছে। অবশ্য মাঝে মাঝে জিনের গঠনগত পরিবর্তনের ফলে তাদের আচরণগত পরিবর্তন-ও ঘটে, অর্থাৎ নতুন বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাব হয়। জিনের এই গঠনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাবকে পরিব্যক্তি বা মিউটেশন [mutation] বলা হয়।
একটি মানুষ তাঁর জীবন শুরু করেন একটি মাত্র কোষ (Zygote) এর মাধ্যমে। Zygote প্রকৃতপক্ষে একটি মানবদেহের ক্ষুদ্রতম সংস্করণ, যার মধ্যে এক কোষীয় পরবর্তী অবস্থার সমস্ত Program করা থাকে। ফলে গর্ভে একটি কোষ ধীরে ধীরে মানব শিশুতে পরিণত হয় এবং মায়ের দেহের বাইরে এসে উক্ত Program অনুযায়ী দৈহিক গঠন এবং মানসিকতা পূর্ণতা পায়। কিন্তু এককোষী Zygote-এ না ছিল Heart, lung, brain, kidney, liver ইত্যাদি এবং ছিল না রাগ, দুঃখ, আনন্দ, ঘৃণা ইত্যাদি; কিন্তু ছিল তার Zygote মধ্যে সবকিছুর Programming।
Zygote এর মধ্যে থাকে ২৩টি chromosomes (22 + x অথবা 22 + y) বাবার শরীর থেকে এবং ২৩টি chromosomes (22 + x) মায়ের শরীর থেকে, মোট ৪৬টি ক্রোমোজোম যার মধ্যে ২২ জোড়া Autosome এবং এক জোড়া Sex chromosome (XY). Chromosome এ থাকে জিন (gene)-যা কিনা বংশগতির ধারক এবং বাহক।
DNA এর যে নির্দিষ্ট অংশ RNA তৈরি করে সেটা হচ্ছে Gene। জিন থেকে প্রাপ্ত সংকেতের আলোকে RNA প্রোটিন তৈরি করে। এই প্রোটিন (Protein) কোষের গাঠনিক এবং কার্যিক একক। এই প্রোটিনের মধ্যে রয়েছে কোষীয় protein এবং কোষীয় Enzyme। আর এই সকল কোষীয় প্রোটিন আমাদের জীবনের ভাষা। এর আলোকে আমরা প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন জীবন দর্শন লাভ করি। নির্দিষ্ট প্রোটিন হরমোন এনজাইম নির্দিষ্ট জীবনের ভাষা প্রকাশ করে।
কেউ অত্যন্ত কৃপণ কেউ আবার অত্যন্ত দানশীল । কেউবা অত্যন্ত হঠাৎ রাগ প্রবণতাযুক্ত, কেউবা মাটির মানুষ যেন রাগ নেই। কেউবা জীবনের ছোটবেলা থেকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অবিচল, কেউ তো আবার লক্ষ্যহীন, কেউবা ক্ষণে ক্ষণে লক্ষ্য পরিবর্তন করে। কেউ প্রচন্ড আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আবার উল্টা কেউ ……………. ইত্যাদি
হ্যানিম্যান চিকিৎসা-বিজ্ঞানের ৪ জন নবযুগ স্রষ্টাদের অন্যতমের আসনে সমাসীন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিত গ্রিক চিকিৎসাবিদ হিপোক্রেটিস (Hippocrates আনু. খ্রীষ্টপূর্ব ৪৬০- খ্রীষ্টপূর্ব ৩৭০) ছিলেন একজন পর্যবেক্ষক। রোগ নির্ণয় করার জন্য রোগীদের শয্যা পার্শ্বে দাঁড়িয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ (clinical observation) করবার কলা-কৌশল তিনিই প্রবর্তন করেছিলেন।
স্যার ডা. হ্যানিম্যান অর্গানন অফ মেডিসিনের ষষ্ঠ সংস্করণের ভূমিকা বলেন-
হিপোক্রেটিসের লিখিত বলিয়া কথিত কোন একটি পুস্তকে” এই লক্ষণীয় কথা গুলি উল্লিখিত আছে: যে ঔষধ যে ব্যাধি সৃষ্টি করিতে পারে সেই ঔষধই তাহা নিরাময় করিতে পারে।
(পাদটীকা: ৩৯। Basil. Froben., 1538. p. 72.) [পাদটীকা:৪০ বোলডাক। ৪১ ডেথারডিং। ৪২ বার্থলোঁ। ৪৩ থৌরী। ৪৪ ভন ষ্টোয়ার্ক।৪৫ ভেনিশ সেনাবাহিনীর চিকিৎসক ষ্টল।
অর্থাৎ এলোপ্যাথি (Allopathy) এর পাশাপাশি আরো দুইটি পদ্ধতি স্বীকৃত-হোমিওপ্যাথি (Homeopathy) ও আইসোপ্যাথি(Isopathy)।
১) স্যার গালেন (Galen সেপ্টেম্বর ১২৯ – আনুমানিক ২১৬ খ্রিস্টাব্দ) একজন প্রচারক ছিলেন। পরিপূর্ণ কর্তৃত্ব নিয়েই তিনি হিপোক্রেটিসের শিক্ষাকে চিকিৎসা জগতে প্রচার করেছিলেন। প্যারাসেলসাস (Paracelsus; 1493–1541) একজন সুযোগ্য কর্মী ছিলেন। চিকিৎসা শাস্ত্রে রাসায়নিক ও প্রাকৃতিক বিশ্লেষণ তিনিই প্রবর্তন করেছিলেন। দুজনই এলোপ্যাথি (Allopathy) চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচারক।
Allopathy is the conventional treatment of disease with drugs that have opposite effects to the symptoms
২) স্যার হ্যানিম্যান (Hahnemann) [১০ এপ্রিল ১৭৫৫ – ২ জুলাই ১৮৪৩] ছিলেন একজন গবেষক। তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা-পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর স্থাপন করেছিলেন। এরপর স্যার বোরিক,ক্লার্ক,হেরিং,কেন্ট,এলেন অন্যান্য।
Homeopathy– a substance that causes symptoms of a disease in healthy people can cure similar symptoms in sick people; this doctrine is called similia similibus curentur, or “like cures like”
৩) এডওয়ার্ড জেনার (Jenner ১৭৪৯-১৮২৩, the father of immunology) প্রবর্তিত গো-বীজের টিকা মৃদুভাবে প্রয়োগ করিলে সাংঘাতিক বসন্তের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ করা যায় এই সত্য স্পষ্টভাবে বুঝিতে পারিয়াই লুই পাস্তুর (Louis Pasteur, ১৮২২ – ১৮৯৫ fathers of germ theory of diseases), ক্ষুদ্রমাত্রায় টিকা প্রদানকে সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক হিসাবে আবিষ্কার করেন (discover of the principles of vaccination)। তিনি কিছু সংখ্যক মেষ সংগ্রহ করিলেন। ইহাদের মধ্যে কতকগুলিকে তিনি ক্ষুদ্র প্রতিষেধক মাত্রায় বসন্তের সংক্রামক বিষের টিকা দিলেন, বাদবাকী সবগুলিকে বৃহৎ মাত্রায় ঐ বিষ প্রবিষ্ট করাইয়া দিলেন। যেগুলিকে ক্ষুদ্রমাত্রায় টিকা দেওয়া হইয়াছিল সেগুলি কোন বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয় নাই এবং বাঁচিয়া গিয়াছিল। কিন্তু বৃহৎ মাত্রায় টিকা দেওয়া মেষসমূহ বসন্তে আক্রান্ত হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিল।
Isopathy – Isopathy (derived from “isos pathos” or “equal suffering”) refers to the use of the exact substance that causes an illness as a therapeutic tool for that same illness. Isopathy is the principle underlying conventional immunotherapy, eg, vaccinating with measles in an attempt to prevent measles, injecting pollen extract to try to subdue pollen allergies, etc.
পাস্তুর তথাকথিত গবেষক ছিলেন না। তিনি অগ্রজ ও মহান হ্যানিম্যানের মতোই একজন বিজ্ঞান-ধর্মী গবেষক ছিলেন। § ৪৬; ও § ৫০ সূত্রে similiaবা সাদৃশ্যবিধানের উদাহরণ দিতে গিয়ে isopathy এনেছেন। এমনকি § ৪৬ সুত্রের ৪৮ পাদটীকায় জেনারের টিকার প্রশংসা করেছেন। যদিও § ৫০ সূত্রে – কিছুটা আপত্তি তুলেছেন [কিন্তু পরবর্তীতে হোমিওপ্যাথরা গ্রহণ করেছে যেমন সিফিলিনাম,সোরিনাম,মে্ডোরিনাম,টিউবারকুলিনাম… ইত্যাদি নোসোডস]।
তবে পাদটীকাঃ ৬৩। রোগীতে ঔষধ প্রয়োগ করিবার তৃতীয় আর একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টা করা হইত। ইহার নাম আইসোপ্যাথি (Isopathy-সমবিধান)। ইহা হইতেছে—সংক্রামক রোগের যে উপাদান রোগ সৃষ্টি করিত সেই উপাদান দ্বারা সেই রোগকে আরোগ্য করা। কিন্তু এইভাবে আরোগ্যসাধন সম্ভবপর বলিয়া ধরিয়া লইলেও পরিশেষে আমরা দেখিতে পাই যে খুব উচ্চশক্তিতে পরিণত করিয়াই সেই ভাইরাস (virus) রোগীকে প্রয়োগ করা হয়; পরিবর্তিত অবস্থাতেই তাহা রোগীকে সেবন করিতে দেওয়া হয়। সদৃশতম (similimum)-কে সদৃশতম দ্বারা প্রতিরোধ সৃষ্টি করিয়াই এই আরোগ্য সম্পাদিত হইয়া থাকে। একই রোগ-সৃষ্টিকারী শক্তি দ্বারা সেই রোগ আরোগ্য করিবার প্রচেষ্টা সাধারণ মানববুদ্ধির বহির্ভূত। সেই জন্য ইহা সকল অভিজ্ঞতার বাহিরে আইসোপ্যাথির (সমবিধানের) প্রতি যাঁহারা প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁহারা সম্ভবতঃ গো-বীজের টিকার উপকারিতার কথা, টিকার দ্বারা ভবিষ্যৎ গো-বসন্তের সংক্রমণ হইতে মানুষকে রক্ষা করিবার কথা এবং আগেভাগে আরোগ্যলাভ করিবার কথা জানিতেন। গো-বসন্ত (Cowpox) ও বসন্ত (Smallpox) একই শ্রেণীর রোগ হইলেও একই ব্যাধি নহে। অনেক বিষয়ে ইহাদের মধ্যে বিভিন্নতা আছে; যেমন—গো-বসন্তের ভোগকাল দ্রুত ও ইহার প্রকৃতি মৃদুভাবাপন্ন। বিশেষতঃ পাশাপাশি অবস্থান করিলেও ইহা মানুষকে সংক্রমণ করে না। মারাত্মক ভীতিপ্রদ বসন্তের সর্বপ্রকার মহামারী ব্যাপকভাবে টিকা দেওয়ার ফলে প্রতিরুদ্ধ হইয়া গিয়াছে। ফলে বর্তমান যুগের মানুষ সেই বিভীষিকাময় বসন্তের মহামারী সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণাও করিতে পারে না। অধিকন্তু, তাহার ফলে প্রাণীজগতের কতকগুলি অদ্ভুত রোগের ঔষধ আমরা পাইতে পারি। মানুষের গুরুত্বপূর্ণ রোগসমূহের জন্যও সদৃশ ঔষধজ শক্তিও (medicinal potencies) আমরা তদ্দ্বারা পাইয়া থাকি। সৌভাগ্যক্রমে এইভাবেই আমাদের হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ভাণ্ডার বৃদ্ধি পাইতেছে। কিন্তু মানবদেহ হইতে সংগৃহীত রোগ-উৎপাদনকারী উপাদান (নোসোডস্ জাতীয় ঔষধ) [মানুষের খোস হইতে গৃহীত ‘সোরিনাম’ (psorinum)] একই মানুষকে চুলকনার জন্য ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা বা তদ্দ্বারা যে ক্ষতি হয় তাহা –? রোগবৃদ্ধি ছাড়া এতদ্বারা সুফল হইতে পারে না।
জেনেটিক হোমিওপ্যাথি হচ্ছে জিনভিত্তিক হোমিওপ্যাথি, আইসোপ্যাথি, এলোপ্যাথি,ইউনানী, জেনেটিক্স,সাইকোলজি, ইমিউনোলজি, নিউট্রিশন, ধর্মীয় সমন্বয়ে ঘটিত নতুন পদ্ধতির চিকিৎসা ব্যবস্থা। যেখানে সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুযায়ী শক্তিকৃত ঔষধ প্রয়োগে মিউটেশন হওয়া ক্ষতিকর জিনগুলোর চিকিৎসা। সেই সাথে মানুষটি যেন শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবে সুস্থ্য হয়। ভবিষ্যতে যেকোনো রোগের সংক্রমণে কোন ঔষধ ছাড়াই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। মানুষটির আবেগ যেন বিবেক দ্বারা পরিচালিত হয়। সমস্ত কোষীয় কার্যকলাপে যেন Permanently Beneficial Gene দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তার মেজাজ, ঘুম, পায়খানা, ক্ষুধা-তৃষ্ণা সবই যেন সর্বদা সুস্থতার ইঙ্গিত বহন করে। এখানে পৃথিবীর সবার জন্য ঔষধ সুনির্দিষ্ট, শুধুমাত্র প্রয়োগ পদ্ধতি ভিন্ন। জন্মের পর থেকে বয়সকেন্দ্রিক গ্রুপ। ঔষধগুলো ডাঃ হ্যানিমান প্রবর্তিত organon of Medicine 6th Edition বর্ণিত নততর বা LM বা পঞ্চাশ সহস্রতমিক পদ্ধতিতে প্রস্তুত করতে হবে। তবে প্রয়োগ পদ্ধতি ,গ্রুপ নির্ণয় , পর্যবেক্ষণ সহ পুরো চিকিৎসা পদ্ধতি আমার লেখা Genetic Homeopathy বইতে বর্ণিত নিয়মে হবে। ঔষধগুলো Electromagnetic Energy Radiation জেনেটিক পরিবর্তনের মাধমে মানুষটি আরোগ্য হবে। এজন্যই এটা জেনেটিক হোমিওপ্যাথি অর্থাৎ বিকৃত জিনের সাদৃশ্য ঔষধজ শক্তির দ্বারা জিন ঠিক করার মাধ্যমে চিকিৎসা।
Genetic Homeopathy ©2025 All Right reserved